[Ads]

Finally, The 8th week assignment activities of the upcoming 2021 SSC candidates have published. The eighth week assignment of 2021 SSC candidates has scheduled. SSC 2021 8th Week History of Bangladesh and World Civilization  Assignment. SSC 8th Week History of Bangladesh and World Civilization Assignment 2021. History of Bangladesh and World Civilization 8th Week Assignment SSC Exam 2021. এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ অষ্টম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস  বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট l ৮ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস  বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১ l ৮ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস  বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর/সমাধান l History of Bangladesh and World Civilization 8th Week Assignment SSC Exam 2021 With Answer. So, SSC 8th week History of Bangladesh and World Civilization assignment 2021 with answer.

Bangladesher itihas o bisshosobbhota assignment. Keep an eye on our site to get all the weekly assignments of SSC 2021 and its solutions. SSC History of Bangladesh and World Civilization All week assignments and their solutions is ready.

[Ads]

Contents

SSC History of Bangladesh and World Civilization 8th Week Assignment

The eighth week task of 2021 SSC applicants has delivered. Directions in such manner have given on the site of the Department of Secondary and Higher Education (dshe.gov.bd). The mandate expresses that due to the Covid pestilence, public instruction exercises and course readings have made task exercises for understudies partaking in the SSC tests in 2021. Task exercises have made in the understudy learning exercises dependent on the adjusted educational program for the understudies. In this specific circumstance, History of Bangladesh and World Civilization given as a task in the eighth week. What’s more, given as an understudy schoolwork.

[Ads]

As in the previous year, high school students given unspecified assignments every week. As a result, assignments and assessments have made for the students in the curriculum and textbooks in compliance with the hygiene rules. Assignment and assessment measures have taken to continue the learning process of the students. Schools have also asked to accept assignments to students online or at social distance. It has asked to ensure that no student is under financial pressure. Assignment No examination or homework can given to students without unscheduled work.

[Ads]

SSC Exam 2021 History of Bangladesh and World Civilization 8th Week Assignment

Because of Corona, all instructive organizations in the nation have shut since March 16, 2020. Furthermore, because of the conclusion of ordinary class exercises, the understudies conceded in class X can’t partake in the instructive exercises according to the endorsed schedule. They won’t assessed. The Ministry of Education has accepted different exercises as another option. Thus, the Ministry of Education has accepted different exercises as another option. As a component of this, NCTB has revamped the educational program and prospectus for the 2021 SSC applicants.

The Department of Secondary and Higher Education has released the eighth week assignment of next year’s SSC candidates. As well as, the Department of Education has asked all teachers and field officials to follow the hygiene rules in distributing and submitting assignments to all students.

[Ads]

Important Suggestions in Assignment Evaluation

The Department of Secondary and Higher Education has given new instructions to teachers in evaluating student assignments. The education system of Bangladesh will go through an important step in terms of evaluation. Students’ memorization will decrease. At the same time they will learn to think subtly. And able to think creatively as well.

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা, পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠসূচির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম সম্পৃক্তকরণ ও ধারাবাহিক মূল্যায়নের আওতায় আনতে এনসিটিবি কর্তৃক বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনাসহ (রুবিক্সসহ) অ্যাসাইনমেন্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের মাধ্যমে তাদের অর্জিত শিখনফল নির্ণয় করা হবে। পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সপ্তাহভিত্তিক শিক্ষার্থী মূল্যায়ন বিবেচনায় নিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট প্রণয়ন করা হয়েছে।

[Ads]

Here are some of our statements for students. You will not write the answers to the assignments given by us exactly. The answers we give will try to write in their own language. This will make your assignment more acceptable and show your creativity.

শিক্ষার্থী বন্ধুদের উদ্দেশ্যে আমাদের কিছু বক্তব্য l আমাদের কর্তৃক প্রদত্ত অ্যাসাইনমেন্ট গুলোর উত্তর তোমরা হুবহু লিখবে না l আমাদের দেওয়া উত্তরগুলো চেষ্টা করবে নিজের ভাষায় লিখতে l এর ফলে তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট বেশি গ্রহণযোগ্য হবে এবং তোমাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ পাবে l

এইচএসসি বাংলাদেশের ইতিহাস  বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ

শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের পরামর্শ, আমরা যেভাবে উত্তর/সমাধান দিব সেটা হুবহু না লিখে উত্তরটা নিজের ভাষায় লেখার চেষ্টা করতে l এতে করে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজে ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে l

SSC 8th Week History of Bangladesh And World Civilization Assignment

SSC History of Bangladesh and World Civilization 8th Week Assignment Answer

সবার আগে নির্ভুল উত্তর পেতে আমাদের সাইটে চোখ রাখুন l সর্বোচ্চ নম্বরের নিশ্চয়তা পেতে আমাদের  অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর গুলো দেখুন l মূলত আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর প্রকাশ করার চেষ্টা করি l

See the answers to our assignment to get the highest number guaranteed. Basically we try to publish the answer to the assignment in a very short time. Keep an eye on our site to get the perfect answer first.Join us our Facebook Group

[Ads]

সামরিক শাসন বিরােধী আন্দোলন

১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই অক্টোবর পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা এবং সেনাবাহিনী প্রধান আইয়ুব খান দেশে সামরিক আইন জারি করেন। আইয়ুব । খানের সমালােচনা করার জন্য ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই অক্টোবর তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই অক্টোবর তারিখে তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও, তার উপর নজরদারিতে রাখা হয়। ১৯৬০ ও ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কার্যত গৃহবন্দি হিসেবে থাকেন।

এ সময় আইয়ুব খান ৬ বছরের জন্য সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘােষণা করেন। জেলে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ভিত্তিহীন অভিযােগ আনা হয়। ১২ই সেপ্টেম্বরে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।১৪ মাস একটানা আটক থাকার পর তাকে মুক্তি দেয়া হলেও জেলের ফটক থেকে পুনরায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করার মাধ্যমে তিনি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে ২২  সেপ্টেম্বর জেল থেকে ছাড়া পান।জেল থেকে মুক্তি লাভের পর তিনি গুপ্ত রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন।

অন্যান্য সাধারণ ছাত্রনেতাকে নিয়ে গােপনে নিউক্লিয়াস ও স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী। পরিষদ নামে সংগঠন গড়ে তােলেন। সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করা।শেখ মুজিব ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার স্বাধীনতার জন্য । ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কাছে সাহায্য চাইলে তিনি প্রত্যাখ্যাত হন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা জানুয়ারি সামরিক সরকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান দলকে পুনরায় সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন । ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই ফেব্রুয়ারি জননিরাপত্তা আইনে তাকে আবার আটক করা হয়। ২রা জুন তারিখে চার বছরব্যাপী বহাল থাকা সামরিক আইন তুলে নেয়ার পর ১৮ই জুন তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

[Ads]

২৫শে জুন তিনি অন্য রাজনৈতিক নেতাদের সাথে মিলে আইয়ুব খান আরােপিত বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেমে পড়েন। ৫ই জুন তিনি পল্টন ময়দানে আয়ােজিত এক সম্মেলনে। আইয়ুব খানের সমালােচনা করেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর তিনি লাহােরে যান এবং সেখানে শহীদ সােহরাওয়ার্দী সাথে মিলে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গড়ে তােলেন। এটি মূলত বিরােধী দলসমূহের একটি সাধারণ কাঠামাে হিসেবে কাজ করেছিল।

শহীদ সােহরাওয়ার্দীর সাথে প্রিয় শিষ্য শেখ মুজিব পুরাে অক্টোবর মাস জুড়ে শহীদ সােহরাওয়ার্দীর সাথে মিলে যুক্তফ্রন্টের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থান সফর করেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শহীদ সােহরাওয়ার্দীর সাথে আলােচনার উদ্দেশ্যে লন্ডন যান। শহীদ সােহরাওয়ার্দী সেখানে | চিকিৎসাধীন ছিলেন ও একই বছরের ৫ ডিসেম্বর বৈরুতে মৃত্যুবরণ করেন।এরপর ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জানুয়ারি মুজিবের বাসায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আওয়ামী লীগকে পুনরায় সংহত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঐ বৈঠকের প্রস্তাবের ভিত্তিতে শেখ মুজিবকে আওয়ামী লীগের মহাসচিব ও মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ একটি সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়, যার মাধ্যমে মুজিব সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরােধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

[Ads]

সেনাশাসক রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের সামরিক শাসন, রাজনীতির নামে মৌলিক গণতন্ত্র (বেসিক ডেমােক্রেসি) প্রচলন এবং পাকিস্তানের কাঠামােতে একইউনিট পদ্ধতির বিরােধী নেতাদের মধ্যে অগ্রগামী ছিলেন শেখ মুজিব মৌলিক গণতন্ত্র অনুযায়ী সারা দেশ থেকে ৮০ হাজার প্রতিনিধি নির্বাচন করা হতাে ও তাদের ভােটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতেন।

এ পদ্ধতি অনুযায়ী ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং প্রদেশগুলােকে একত্রে জুড়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ঐ সময় সামরিক বাহিনীর গণহত্যা আর বাঙালিদের ন্যায্য দাবী পূরণে সামরিক শাসকদের ঔদাসীন্যতা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তােলে। | অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করতে গিয়ে মুজিব আইয়ুববিরােধী সর্বদলীয় প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন করেন। নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পূর্বে ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই নভেম্বর তারিখে ভারতের দালাল অভিযুক্ত করে তাকে আটক করা হয়। শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং আপত্তিকর প্রস্তাব পেশের অভিযােগে অভিযুক্ত করে এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। অবশ্য উচ্চ আদালতের এক রায়ে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই তিনি মুক্তি পেয়ে যান।

পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য

১৯৪০ সালের লাহাের প্রস্তাব অনুসারে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু লাহাের প্রস্তাবের মূলনীতি অনুযায়ী পূর্ব বাংলা পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা। পায়নি। দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্ব বাংলাকে স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলনসংগ্রাম চালিয়ে যেতেহয়েছে। এসময় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক নীতি অনুসরণ করে। এরই প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ পূর্ব বাংলায় স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।

[Ads]

রাজনৈতিক বৈষম্য

১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানকে রাজনৈতিকভাবে | পঙ্গু করে পশ্চিম পাকিস্তানের মুখাপেক্ষী রাখা হয়। লাহাের প্রস্তাবে পূর্ণ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হলেও পাকিস্তানি শাসকরা প্রথম থেকেই এ বিষয়ে অনীহা প্রকাশ। করে। গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে স্বৈরতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র ও সামরিকতন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশ শাসন করতে থাকে। তারা পূর্ব পাকিস্তানের ওপর উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি–পরতিটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শােষণ চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের সমৃদ্ধি ঘটায়।

বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপর দমন, নিপীড়ন চালিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবেশ অচল করে রাখে। বারবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাংলার জাতীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে জেলে বন্দী করে রাখে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের মন্ত্রিসভায় বাঙালি প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল খুবই কম। গণতান্ত্রিক পঙক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য পাকিস্তানি শাসকরা জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন দিতে অনীহা প্রকাশ করে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচিত সরকারকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করে। পরবর্তী মন্ত্রিসভাগুলােকে বারবার ভেঙে দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের শাসনকার্য অচল করে রাখে। অবশেষে পাকিস্তান সরকার ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়।

প্রশাসনিক বৈষম্য

[Ads]

পাকিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি ছিল সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তাগণ। ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের মন্ত্রণালয়গুলােতে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার ৯৫৪ জনের মধ্যে বাঙালি ছিল মাত্র ১১৯ জন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ৪২০০০ কর্মকর্তার মধ্যে বাঙালির সংখ্যা ছিল মাত্র ২৯০০| ১৯৪৭ সালে করাচিতে রাজধানী হওয়ায় সকল সরকারি অফিস-আদালতে পশ্চিম পাকিস্তানিরা ব্যাপক হারে চাকরি লাভ করে। বলার অপেক্ষা রাখে না পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সকল উচ্চপদে পশ্চিম পাকিস্তানিদের একচেটিয়া অধিকার ছিল। সরকারের সব দপ্তরের সদর দপ্তর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। ভৌগােলিক দূরত্বের কারণে বাঙালির পক্ষে সেখানে গিয়ে। চাকরি লাভ করা সম্ভব ছিল না। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না। দেওয়ায় প্রতিযােগিতামূলক পরীক্ষায় বাঙালি ছাত্রদের সাফল্য সহজ ছিল না।

১৯৬৬ সালে পূর্ব ও পশ্চিম পশ্চিম পাকিস্তানে গেজেটেড কর্মকর্তা ছিল যথাক্রমে ১৩৩৮ ও ৩৭০৮ জন এবং নন-গেজেটেড কর্মকর্তা ছিল যথাক্রমে ২৬৩১০ ও ৮২৯৪৪ জন। ১৯৬২ সালে ফরেন সার্ভিসে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ২০.৮%। বিদেশে ৬৯ জন রাষ্টদতের মধ্যে ৬০ জনই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের।

সামরিক বৈষম্য

পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক শাসনের আরেকটি ক্ষেত্র ছিল সামরিক বৈষম্য। সামরিক বাহিনীতে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব ছিল অতি নগণ্য। প্রথম থেকেই সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদ পাঞ্জাবিরা দখল করে রেখেছিল। তারা বাঙালিদের। সামরিক বাহিনী থেকে দূরে রাখার নীতি নেয়। সামরিক বাহিনীর নিয়ােগের ক্ষেত্রে যে কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তাতে ৬০% পাঞ্জাবি, ৩৫% পাঠান এবং মাত্র ৫%। পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য অংশও পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নির্ধারণ করা হয়। বাঙালির দাবির মুখে সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তা ছিল নগণ্য। ১৯৫৫ সালের এক হিসাবে দেখা যায়, সামারিক বাহিনীর মােট ২২১১ জন কর্মকর্তার মধ্যে বাঙালি ছিল মাত্র ৮২ জন। ১৯৬৬ সালে সামরিক বাহিনীর ১৭ জন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ১ জন ছিল বাঙালি। এ সময় সামরিক অফিসারদের মধ্যে ৫% ছিল বাঙালি। পাকিস্তানের মােট ৫ লক্ষ জন।

[Ads]

সেনাসদস্যের মধ্যে বাঙালি ছিল মাত্র ২০ হাজার জন অর্থাৎ মাত্র ৪%। সামরিক বাজেটের ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাহ্য করা হতাে না। আইয়ুব খানের শাসনামলে। মােট বাজেটের ৬০% সামরিক বাজেট ছিল। যার সিংহভাগ দায়ভার বহন করতে হতাে পূর্ব পাকিস্তানকে, অথচ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার প্রতি অবহেলা দেখানাে হতাে।

অর্থনৈতিক বৈষম্য 

জন্মলগ্ন থেকে পাকিস্তানে তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয়। প্রথমটিতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্যয় ছিল যথাক্রমে ১১৩ কোটি ও ৫০০ কোটি রুপি, দ্বিতীয়টিতে ছিল বরাদ্দ ছিল ৯৫০ কোটি রুপি পূর্ব পাকিস্তানের জন্য, ১৩৫০ কোটি রুপি পশ্চিম। পাকিস্তানের জন্য। তৃতীয়টিতে পূর্ব ও পশ্চিমের জন্য বরাদ্দ যথাক্রমে ৩৬% ও ৬৩%। রাজধানী উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ব্যয় বেশিরভাগ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য। ১৯৫৬ সালে করাচির উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হয় ৫৭০ কোটি টাকা, যা ছিল সরকারি মােট ব্যয়ের ৫৬.৪%। সে সময় পূর্ব পাকিস্তানের মােট সরকারি ব্যয়ের হার ছিল ৫.১০%। ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ইসলামাবাদ। নির্মাণের জন্য ব্যয় করা হয় ৩০০ কোটি টাকা, আর ঢাকার জন্য ব্যয় করা হয় ২৫ কোটি টাকা। বৈদেশিক সাহায্য বরাদ্দের ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পায় মাত্র ২৬.৬%। ১৯৪৭-১৯৭০ পর্যন্ত মােট রপ্তানি আয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অংশ ছিল ৫৪.৭%। অথচ রপ্তানি আয় বেশি করলেও পূর্ব ।

পাকিস্তানের জন্য আমদানি ব্যয় ছিল কম অর্থাৎ মাত্র ৩১.১%। রপ্তানির উদৃবত্ত অর্থ পশ্চিম পাকিস্তানের আমদানির জন্য ব্যয় করা হতাে। শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের | কাঁচামাল সস্তা হলেও শিল্প-কারখানা বেশিরভাগ গড়ে উঠেছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানের কিছু শিল্প গড়ে উঠলেও সেগুলাের বেশিরভাগের মালিক ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি। ফলে শিল্প ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে নির্ভরশীল থাকতে হতাে পশ্চিম পাকিস্তানের উপর।

শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য

[Ads]

শিক্ষা ক্ষেত্রেও বাঙালিরা বৈষম্যে শিকার হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানিরা। বাঙালিদের নিরক্ষর রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। পক্ষান্তরে পশ্চিম পাকিস্তানে | শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ফলে পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষার। উন্নয়নের কোন চেষ্টায় তারা করেনি। এছাড়া বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে শিক্ষার মাধ্যম করা বা আরবি ভাষায় বাংলা লেখার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থায় আঘাত হানতে চেয়েছিল। শিক্ষা খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে পূর্ব । পাকিস্তানের প্রতি চরম বৈষম্য দেখানাে হয়। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যে শিক্ষা খাতে মােট বরাদ্দের মধ্যে পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ২০৮৪ মিলিয়ন রুপি এবং পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ছিল ৭৯৭ মিলিয়ন রুপি। পাকিস্তানের সর্বমােট ৩৫টি বৃত্তির ৩০টি পেয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তান এবং মাত্র ৫টি বরাদ্দ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য।

সামাজিক বৈষম্য

রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, হাসপাতাল, ডাকঘর, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, বিদ্যুৎ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাঙালিদের তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানিরা বেশি সুবিধা ভােগ করত। সমাজকল্যাণ ও সেবামূলক সুবিধা বেশিরভাগ পশ্চিম পাকিস্তানিরা পেত। ফলে সার্বিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত ছিল।

সাংস্কৃতিক বৈষম্য

দুই অঞ্চলের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। পূর্ব পাকিস্তানের। অধিবাসী ছিল মােট জনসংখ্যার প্রায় ৫৬%। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল হাজার বছরের পুরনাে। অপর দিকে ৪৫% জনসংখ্যার পশ্চিম পাকিস্তানে বিভিন্ন ভাষা, জাতি ও সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিল। উর্দুভাষী ছিল মাত্র ৩.২৭%। অথচ তা সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ভাষা ও সুসমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা। প্রথমেই তারা বাংলা ভাষাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে এবং বাংলা ভাষাকে আরবি বর্ণে লেখার ষড়যন্ত্রে শুরু করে। বাঙালি। সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত, নাটক, সাহিত্য। বাঙালি সংস্কৃতিতে আঘাত হানার জন্য রবীন্দ্র সঙ্গীত ও রচনাবলি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করে। পহেলা বৈশাখ পালনকে হিন্দু প্রভাব বলে উল্লেখ করে সেখানেও বাধা দানের চেষ্টা করে।

[Ads]

ছয় দফা আন্দোলন

বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহােরে অনুষ্ঠিত বিরােধী রাজনৈতিক দলগুলাের এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন। প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “৬ দফা দাবি পেশ করেন।৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানের লাহােরে পৌছান এবং তার পরদিন অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি ৬ দফা দাবি পেশ করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় শেখ মুজিবকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে নিজেই ৬ ফেব্রুয়ারি এর সম্মেলন বর্জন করেন।

১৯৬৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয়দফা প্রস্তাব এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি সংগৃহীত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমদের ভূমিকা সংবলিত ছয় দফা কর্মসূচির একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। যার নাম ছিল ছয় দফাঃ আমাদের বাঁচার দাবি। ২৩শে ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান বিরােধীদলীয় সম্মেলনে ৬ দফা পেশ করেন। এরপর ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘আমাদের । বাঁচার দাবি: ৬-দফা কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রচার করা হয়। ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দফা উত্থাপন করা হয় লাহাের প্রস্তাবের সাথে মিল রেখে।

ছয় দফা দাবির মূল উদ্দেশ্য

পাকিস্তান হবে একটি ফেডারেল রাষ্ট্র, ছয় দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই ফেডারেল রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। ছয়দফা কর্মসূচীর ভিত্তি ছিল ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব। পরবর্তীকালে এই ৬ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন জোরদার হয়। বাংলাদেশের জন্য এই আন্দোলন এতােই গুরুত্বপূর্ণ যে একে ম্যাগনা কার্টা বা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদও বলা হয়। প্রতি বছর ৭ই জুন বাংলাদেশে ‘৬ দফা দিবস’ পালন করা হয়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হক, মুজিবুল হকসহ মােট ১১ জন বাঙালি শহিদ হন। ৬ দফা আন্দোলনের প্রথম শহিদ ছিলেন সিলেটের মনু মিয়া।

১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবিসমূহ

প্রস্তাব -১: শাসনতান্ত্রিক কাঠামাে ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি:

লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশনে পরিণত করতে হবে, যেখানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার থাকবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভােটে নির্বাচিত আইন পরিষদ সার্বভৌম হবে;

প্রস্তাব -২: কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা:

কেন্দ্রীয় (ফেডারেল) সরকারের ক্ষমতা কেবল মাত্র দু’টি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে- যথা, দেশরক্ষা ও বৈদেশিক নীতি। অবশিষ্ট সকল বিষয়ে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির ক্ষমতা থাকবে নিরঙ্কশ।

প্রস্তাব – ৩ : মুদ্রা বা অর্থ-সম্বন্ধীয় ক্ষমতা:

মুদ্রার ব্যাপারে নিম্নলিখিত দু’টির যে কোন একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা চলতে পারেঃ-

(ক) সমগ্র  দেশের জন্যে দু’টি পৃথক, অথচ অবাধে বিনিময়যােগ্য মুদ্রা চালু থাকবে।অথবা

(খ) বর্তমান নিয়মে সমগ্র দেশের জন্যে কেবল মাত্র একটি মুদ্রাই চালু থাকতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে শাসনতন্ত্রে এমন। ফলপ্রসূ ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে করে পূর্ব-পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে মূলধন পাচারের পথ বন্ধ হয়। এক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক ব্যাংকিং রিজার্ভেরও পত্তন করতে হবে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য পৃথক আর্থিক বা অর্থবিষয়ক নীতি প্রবর্তন করতে হবে।

প্রস্তাব – ৪: রাজস্ব, কর, বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা:

ফেডারেশনের অঙ্গরাজ্যগুলির কর বা শুল্ক ধার্যের ব্যাপারে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনরূপ কর ধার্যের ক্ষমতা থাকবে না। তবে প্রয়ােজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গরাষ্ট্রীয় রাজস্বের একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্য হবে। অঙ্গরাষ্ট্রগুলির সবরকমের করের শতকরা একই হারে আদায়কৃত অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল গঠিত হবে।

প্রস্তাব – ৫: বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা:

(ক) ফেডারেশনভুক্ত প্রতিটি রাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে।

(খ) বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলির এখতিয়ারাধীন

থাকবে।

(গ) কেন্দ্রের জন্য প্রয়ােজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অথবা সর্বসম্মত

কোন হারে অঙ্গরাষ্ট্রগুলিই মিটাবে।

(ঘ) অঙ্গ-রাষ্ট্রগুলির মধ্যে দেশজ দ্রব্য চলাচলের ক্ষেত্রে শুল্ক বা করজাতীয় কোন রকম

বাধা-নিষেধ থাকবে না।

(ঙ) শাসনতন্ত্রে অঙ্গরাষ্ট্রগুলিকে বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রেরণ এবং স্ব স্বার্থে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে।

প্রস্তাব – ৬ : আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা:

আঞ্চলিক সংহতি ও শাসনতন্ত্র রক্ষার জন্য শাসনতন্ত্রে অঙ্গ-রাষ্ট্রগুলিকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে আধা সামরিক বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠন ও রাখার ক্ষমতা দিতে হবে।

 

আগরতলা মামলা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান

১৯৬৮ সালের প্রথম দিকে পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ বাঙালি সামরিক। ও সিএসপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে; যা ইতিহাসে ‘আগরতলা মামলা বা ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে সুপরিচিত। সরকারি নথিতে অবশ্য এর নাম ভিন্ন ছিল। এর । নাম ছিল ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা।সামরিক শাসক আইয়ুব। খানের আমলে করা এই মামলা হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য স্বাধীনতাকামী বাঙালি অফিসারদের শায়েস্তা করার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই মামলাই হয়ে উঠে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের পথের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর পথ ধরেই আসে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান।

আর বাঙালির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠেন ‘বঙ্গবন্ধু’। মামলায় অভিযােগ আনা হয়েছিল, শেখ মুজিবুর রহমানসহ এই কর্মকর্তারা ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত আগরতলা শহরে ভারত সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে পাকিস্তানকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। এতে শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর। আসামি করা হয় এবং তাঁকে এই ষড়যন্ত্রের মূলহােতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বস্তুত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাটি দায়ের করার সময় শেখ মুজিবুর রহমান অন্য একটি মামলায় আটক ছিলেন।

বিচার প্রক্রিয়া

১৯৬৮ সালের ৬ জানুয়ারি দুজন সিএসপি অফিসারসহ ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার সম্পর্কে সরকারি প্রেসনােটে দাবি করা হয়েছিল, ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব পাকিস্তানের উদঘাটিত স্বার্থবিরােধী এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযােগে। এঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই বছরের ১৭ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশ রক্ষা আইনের একটি মামলা থেকে মুক্তি দিয়ে আবার গ্রেপ্তার করে ঢাকা সেনানিবাসে | আটক রাখা হয়। এরপরে ৩৫ জনকে আসামি করে সরকারপক্ষ মামলা করে।

একই বছরের ১৯ জুন ঢাকা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অভিযুক্ত আসামিদের বিচারকাজ শুরু হয়। এতে অভিযােগপত্র দাখিল করে বলা হয়, আসামিরা ভারতীয় অর্থ ও অস্ত্রের সাহায্যে সশস্ত্র বিপ্লব ঘটিয়ে কেন্দ্র থেকে পূর্ব। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন। এই মামলার আসামিরা তখন ছিলেন মৃত্যুর মুখে। যদিও শেখ মুজিবুর রহমান অভয় দিয়ে তাঁদের বলতেন, ভয়ের কিছু নেই। এই মামলা টিকবে না। সবাই নির্দোষ প্রমাণিত হবে এবং মুক্তি পাবেন।

মামলা প্রত্যাহার

পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর আধিপত্যবাদী মনােভাব শুরু থেকেই ছিল। বাঙালিরা ছিল শােষিত ও নির্যাতিত। এই শােষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালি বার বার রুখে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ১৯৬৬ সালেই শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা পেশ করেন; যা বাঙালির মুক্তি সনদ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। আগরতলা মামলার বিচারকাজ চলার সময় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বাঙালির আস্থা। আরও বৃদ্ধি পায়, স্বাধীনতাকামী বাঙালি তাদের নেতার বিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। সারা দেশে হরতাল, অবরােধের মধ্য দিয়ে সমগ্র জাতি গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা কারফিউ ভঙ্গ করে রাজপথে নেমে আসে।এর মধ্যে ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে এই মামলার অন্যতম আসামি সার্জেন্ট জহুরুল হককে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই খবর বাইরে এলে সারা দেশে আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আসাদ, নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর শামসুজ্জোহার মতাে মুক্তিকামী বাঙালিদের হত্যার ঘটনায় গােটা পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠে। এই গণআন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করার মতাে ক্ষমতা আইয়ুব সরকারের ছিল না।

একপর্যায়ে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আইয়ুব। সরকার দেশে আসন্ন একটি গৃহযুদ্ধ এড়ানাের চেষ্টা হিসেবে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়।মামলাটির শেষ শুনানির তারিখ ছিল। ১৯৬৯ সালের ৬ জানুয়ারি। এই মামলার জবানবন্দিতে শেখ মুজিবুর । রহমান আগরতলা মামলাকে সরকারের হীন ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা আখ্যা দেন। এই মামলার আসামিদের ওপর বর্বর নির্যাতনেরও তিনি প্রতিবাদ। জানান। সবশেষ ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানসহ মামলার সব আসামিকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরের দিন অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে ঐতিহাসিক সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং এই সমাবেশ থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা

বঙ্গ অতিশয় প্রাচীন ভূমি। রামায়ণ-মহাভারতের আখ্যানে এর উল্লেখ আছে। হাজার হাজার বছরের পরিক্রমায় একপর্যায়ে এই জনপদের নাম হয়েছে বাংলাদেশ। এর অধিবাসীরা হলেন বাঙালি। বাঙালির আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সুফরণ ঘটে ইংরেজ ঔপনিবেশিক আমলে। ওই সময় | এ অঞ্চলে রাজনৈতিক দল তৈরি হয়, সীমিত আকারে চালু হয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের । প্রক্রিয়া এবং একই সঙ্গে শুরু হয় উপনিবেশবিরােধী স্বাধীনতার লড়াই। এটি ছিল সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদের শুরুর সময়।বিশ শতকের গােড়ার দিকে পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশকে নিয়ে। নতুন একটি প্রদেশ হলে এ অঞ্চলে অন্য রকম এক জাতীয়তাবােধ তৈরি হয়েছিল। এটাই হলাে ১৯০৫ সালের ‘বঙ্গভঙ্গ’। ১৯১১ সালে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলে পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা | তাঁদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান। তখন থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের ।

ভারতভাগ পর্যন্ত আঞ্চলিক ও ধর্মীয় পরিচিতির এক মিশেল থেকে বাঙালি মুসলমানের রাজনৈতিক মনস্তত্ত্ব গড়ে ওঠে। এর একটি প্রকাশ দেখা যায় ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহােরে মুসলিম লীগের এক অধিবেশনে স্যার জাফরউল্লাহ খানের মুসাবিদা করা প্রস্তাবে, যেখানে | তিনটি সার্বভৌম রাষ্ট্র নিয়ে ভারতীয় কনফেডারেশনের কথা বলা হয়েছিল।

প্রস্তাবটি পাঠ করেছিলেন বাংলার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে (আবুল কাশেম) ফজলুল হক। এই কনফেডারেশনের একটি ইউনিট। হওয়ার কথা উত্তর-পূর্ব ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটি নিয়ে, অর্থাৎ বাংলা ও আসাম। কিন্তু বাঙালি মুসলমান তখন সর্বভারতীয় ইসলামি জোশে আচ্ছন্ন। ওই সময় বাংলার সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হােসেন শহীদ। সােহরাওয়ার্দী দিল্লিতে মুসলিম লীগের এক কনভেনশনে এক পাকিস্তানের পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপন করলে ভারতের পূর্বাঞ্চলে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। গঠনের স্বপ্ন ভনুডল হয়ে যায়। বাংলা মুলুকের বড়-ছােট প্রায় সব নেতা তখন পাকিস্তানের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত। রাজনীতির অনিবার্য গন্তব্য হলাে ভারতভাগ। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট তৈরি হলাে পাকিস্তান। আধুনিক বিশ্বে ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এটিই প্রথম রাষ্ট্র। দ্বিতীয়টি হলাে ইসরায়েল, ১৯৪৮ সালের মে মাসের ১৪ তারিখ।

১৯৪৭ সালের জুন মাসেই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা বিতর্ক। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন যখন ভারতভাগের পরিকল্পনা ঘােষণা করেন, তখনই সংবাদপত্রে খবর বেরােয় যে পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা উর্দুকে হবুরাষ্ট্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে চাইছেন। এর বিরােধিতা করে বেশ কয়েকজন বাঙালি মুসলমান বুদ্ধিজীবী প্রবন্ধ লেখেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আবদুল হক, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী মােতাহার হােসেন, আবুল মনসুর আহমদ, মুহম্মদ এনামুল হক, ফররুখ আহমদ, আবুল হাশিম প্রমুখ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে এসব লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। এর ভিত্তিতেই পরে এ দেশে গড়ে উঠেছিল ভাষা আন্দোলন, যার মাধ্যমে পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয়তাবােধ তৈরির বীজ বােনা হয়েছিল। সুতরাং বলা চলে, পরবর্তী সময় এ দেশে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের যে ধারা তৈরি হয়েছিল, তার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন।বুদ্ধিজীবীরা ।

সেখান থেকেই শুরু স্বাধিকার ভাবনার। এর একটি সংগঠিত রূপ ছিল ১৯৪৭ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকায় ‘তমদুন মজলিস’-এর জন্ম হওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্র এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ তাঁরা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু শিরােনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এতে লিখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী মােতাহার হােসেন এবং কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ-এর সম্পাদক আবুল মনসুর আহমদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক এবং তমদুন মজলিসের সম্পাদক আবুল কাশেম ভাষা বিষয়ে একটি প্রস্তাব লেখেন। প্রস্তাবে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা, আদালত ও অফিসের ভাষা হবে বাংলা এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ভাষা হবে বাংলা ও উর্দু।

১৯৫০ সালের অক্টোবরে ঢাকায় রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের একটি সভায় তৈরি হয় ডেমােক্রেটিক ফেডারেশন। এর উদ্যোগে ৪-৫ নভেম্বর আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে ঢাকায় সংবিধান বিষয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে পাকিস্তানের দুই অংশের জন্য পরিপূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের একটি রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছিল।

সম্মেলনে গৃহীত সুপারিশগুলাের মধ্যে ছিল:

১. রাষ্ট্রের নাম হবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র (ইউনাইটেড স্টেটস অব পাকিস্তান)। এর দুটি | অংশ থাকবে, পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান।।

২. পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা ও উর্দু।

৩. দেশরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয় কেন্দ্রের হাতে থাকবে।

দেশরক্ষা বাহিনীর দুটি ইউনিট থাকতে হবে, যার একটি থাকবে পূর্ব পাকিস্তানে এবং অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তানে।  প্রতিটি অঞ্চলের দেশরক্ষা বাহিনী সেই অঞ্চলের লােক দিয়েই গঠিত হবে। পূর্ব পাকিস্তানের একটি আঞ্চলিক বৈদেশিক মন্ত্রণালয় থাকবে। অন্য সব ক্ষমতা থাকবে প্রদেশের হাতে৷ প্রদেশের অনুমতি ছাড়া কেন্দ্র কোনাে কর ধার্য করতে পারবে না।

বাঙালির ঠিকানা খোঁজার লড়াই নতুন মাত্রা পায় ১৯৬৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মধুর ক্যানটিন চত্বরে ছাত্রলীগের এক কর্মিসভায়। সেখানে হঠাৎ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আফতাব আহমদ স্লোগান দিয়ে ওঠেন, ‘জয় বাংলা’। তাৎক্ষণিকভাবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব অন্যরা অতটা না বুঝলেও কয়েক মাসের ব্যবধানে এটি হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীকী স্লোগান। যার মাধ্যমে ফুটে উঠেছিল একটি জাতিরাষ্ট্রের আকাঙক্ষা। ১৯৭০ সালের ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানে (সােহরাওয়ার্দী উদ্যান)। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় দলের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতাে প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেন জয় বাংলা। তত দিনে তিনি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন। তিনি তখন বঙ্গবন্ধু।

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে একচেটিয়ায় এবং সারা পাকিস্তানে নিরঙ্কশ জয় পায়। এই নির্বাচন ছিল শেখ মুজিবের নেতৃত্ব এবং ছয় | দফা কর্মসূচির প্রতি জনগণের ম্যান্ডেট। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপণ ও গড়িমসি করায় পূর্ব পাকিস্তান ফুঁসে ওঠে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ দুপুর থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দটি আর এ | দেশে উচ্চারিত হয়নি। তখন থেকেই এটি বাংলাদেশ। ভাষার দাবিতে যে আন্দোলন ২৩ বছর আগে শুরু হয়েছিল, তা স্বাধীনতার দাবিতে চুড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে। তখন সব ছাপিয়ে একটি স্লোগানই সবার মুখে মুখে —বীর বাঙালি অস্ত্র ধরাে, বাংলাদেশ স্বাধীন করাে। এই পর্বে ছিল অনেক রহস্য, নাটকীয়তা, ষড়যন্ত্র আর কূটনীতি—যার জট এখনাে পুরােটা খােলেনি। এটি ছিল এই জনপদের কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাঁকবদলের ক্ষণ।

২৫ দিনের অসহযােগ আন্দোলন, ২৬০ দিনের মুক্তিযুদ্ধ, লাখ লাখ মানুষের। আত্মত্যাগ—এসবের বিনিময়ে স্বাধীন হলাে বাংলাদেশ। কিন্তু কীভাবে?

কবি মাশুক চৌধুরীর লেখা থেকে উদৃধতি দিচ্ছি:

 ইতিহাসের বুকের ওপর

হাজার বছরের পুরােনাে একটা পাথর ছিল

সেই পাথর ভেঙে ভেঙে

আমরা ছিনিয়ে এনেছি স্বাধীনতা

এই ইতিহাসটুকু আজো লেখা হয়নি।

Conclusion

Lastly, we wish the student brothers and sisters all the best. We will continue our efforts for the overall cooperation of the students. There was a blessing that the students could achieve their desired goal. If we can do them any good in the way of their success, we will consider ourselves successful. Stay with us until then.

I Boss Host BD